Wednesday 17 August 2016

পিরিওড বন্ধ হবার পরের দিন অসুরক্ষিত সঙ্গমের ফলে গার্লফ্রেন্ডের স্তন থেকে তরল ক্ষরণ হচ্ছে.............

পিরিওড বন্ধ হবার পরের দিন অসুরক্ষিত সঙ্গমের ফলে গার্লফ্রেন্ডের স্তন থেকে তরল ক্ষরণ হচ্ছে


প্রশ্নঃ আমি আমার গার্লফ্রেন্ডের সাথে তার পিরিওড বন্ধ হবার পরের দিন আবেগবশত সেক্স করে ফেলেছি। সেক্স করার সময় আমরা দুজনে শুয়ে ছিলাম। আমার পুরুষাঙ্গের প্রায় এক ইঞ্চি মত ঢোকানোর পর ১ মিনিটের মধ্যে বীর্যপাত হয়ে যায় এবং বীর্যপাতের সময় আমি খুব দ্রুত লিঙ্গ বাইরে বের করে নেই। ফলে প্রায় সমস্ত বীর্যই বাইরে পরে গেছে। তা সত্ত্বেও আমার সন্দেহ হচ্ছে বীর্য কি একটু বা একফোঁটা হলেও যোনির ভেতরে ঢুকে গেছে? বীর্যপাতের প্রায় সাথে সাথে গার্লফ্রেন্ড বাথরুমে গিয়ে একটু প্রস্রাব করে নেয়। সে কি প্রেগন্যান্ট হতে পারে? আর যদি হয় তাহলে কিভাবে খুব সহজে গর্ভপাত করানো যায়? আর একটা সমস্যা – সেক্স করার ৬-৭ দিন পর ও বলছে ওর স্তনে ব্যাথা আনুভব করে। চাপ দিলে একরকম তরল পদার্থ বের হয় যা একটু ঘোলা ও লবনাক্ত। কিভাবে আমরা দুজন এই সমস্যা থেকে বের হতে পারি একটু বলে দিন। ধন্যবাদ।

উঃ পিরিওড বন্ধ হবার পরের দিন যৌনসঙ্গমের ফলে সাধারণত গর্ভসঞ্চারের সম্ভাবনা নগন্য। অবশ্য যদি আপনার গার্লফ্রেন্ডের পিরিওড অনিয়মিত হয় সেক্ষেত্রে প্রেগন্যান্সি সম্ভব। বীর্যপাতের সময় খুব দ্রুত পুরুষাঙ্গ বাইরে বের করে নিলেও কিছুটা বীর্য যোনির ভেতর অবশ্যই পরবে। আর গর্ভসঞ্চারের জন্য প্রয়োজন কেবল একটিমাত্র শুক্রাণু। কাজেই যদিও এক্ষেত্রে আপনার গার্লফ্রেন্ডের প্রেগন্যান্ট হয়ে যাবার সম্ভাবনা খুবই কম, কিন্তু কপাল নেহাৎ খারাপ হলে সবকিছুই সম্ভব! সঙ্গমের পর সঙ্গিনী প্রস্রাব করে নিলেই যে গর্ভসঞ্চার রোধ হবে এই ধারণা নেহাতই একটি ভুল ধারণা। সেক্সের পর প্রস্রাব করার সাথে গর্ভসঞ্চার রোধের কোন সম্পর্ক নেই। তবে হ্যাঁ, এর ফলে মূত্রনালীতে সংক্রমণের সম্ভাবনা কমে যায়।

যদি নিতান্তই আপনার গার্লফ্রেন্ডের এর পরের পিরিওড না হয় তবে পিরিওড মিস হবার পর “হোম প্রেগন্যান্সি টেস্ট কিট” দিয়ে বাড়িতে বসেই প্রস্রাব পরীক্ষা করুন। এই “হোম প্রেগন্যান্সি টেস্ট কিট” যেকোনো ওষুধের দোকানেই পাওয়া যায়। প্রথম টেস্টের ফলাফল নেগেটিভ হলে ৭ দিন পর পুণরায় পরীক্ষা করুন। আর টেস্টে রেজাল্ট পজিটিভ হলে (মানে সত্যিই প্রেগন্যান্ট হলে) কোন ভাল স্ত্রী-রোগবিশেষজ্ঞের সাথে কথা বলে গর্ভপাতের ব্যবস্থা করাবেন। নিজে নিজে ওস্তাদি করে বা হাতুড়ে ডাক্তারের কাছে গিয়ে গর্ভপাত করতে গেলে হিতে বিপরীত, এমনকি জীবনহানিও ঘটতে পারে। ভাল ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে দুটো বিশেষ ওষুধের সাহায্যে খুব সহজেই গর্ভপাত সম্ভব এবং পুরো ব্যাপারটাই গোপন রাখা যেতে পারে।

একাধিক কারণে স্তন থেকে তরল পদার্থ বের হতে পারে। এদের মধ্যে কিছু কারণ যেমন চিন্তার কোন বিষয় নয় তেমনি আবার কিছু কারণ একটু জটিল। প্রেগন্যান্ট হলে স্তন থেকে তরল ক্ষরণ হতে পারে। স্তনে চাপ প্রয়োগ করে টিপলে এমনকি ব্রা-এর সাথে ঘষা খাবার ফলেও স্তন থেকে তরল ক্ষরণ হতে পারে। স্তনে সিস্ট (cyst) বা fibrous টিস্যু তৈরি হলেও স্তন থেকে তরল ক্ষরণ হতে পারে। তবে এক্ষেত্রে স্তনে ব্যাথার সাথে সাথে হালকা চাপ দিলে ভেতরে দলার মত কিছু আছে মনে হয়। থাইরয়েডের সমস্যা, পিটুইটারী গ্রন্থির সমস্যা, ড্রাগ খাওয়া, কিছু ওষুধ – যেমন, হরমোন, মানসিক রোগের ওষুধ ইত্যাদির ফলেও স্তন হতে তরল ক্ষরণ হতে পারে। এমনকি দেখা গেছে মৌরি খেলেও অনেকের স্তন থেকে তরল বের হয়। স্তনে সংক্রমণের ফলে স্তন থেকে তরল ক্ষরণ হতে পারে। স্তনের মধ্যে বিভিন্ন নালীকাগুলিতে (ducts) কোন বাধা সৃষ্টি (blockage) হলেও স্তন থেকে তরল ক্ষরণ হওয়া সম্ভব। কিছু কিছু ধরনের স্তন ক্যানসারের ফলেও তরল ক্ষরণ হয়। কাজেই আপনার গার্লফ্রেন্ডের ঠিক কি হয়েছে সেটা ভাল করে পরীক্ষা না করে সমস্যা সমাধানের রাস্তা বলা সম্ভব নয়। খুব সম্ভবত আপনার গার্লফ্রেন্ড প্রেগন্যান্ট নয় এবং তার স্তন থেকে তরল বের হবার কারণ স্তনে অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ। যদি এর পরেরবার পিরিওড হবার সময় পর্যন্ত আপনার গার্লফ্রেন্ডের স্তন থেকে তরল ক্ষরণ বন্ধ না হয় তবে অতি অবশ্যই গার্লফ্রেন্ডকে নিয়ে কোন ভাল স্ত্রী-রোগ বিশেষজ্ঞের কাছে যান। উনি পরীক্ষা করে দেখে সঠিক চিকিৎসা করতে পারবেন। এর পর থেকে কনডম ব্যবহার না করে যৌন সঙ্গম করবেন না। খেয়াল রাখবেন গার্লফ্রেন্ডের স্তন যেন অযথা অতিরিক্ত টেপাটেপি করা না হয়। শুভেচ্ছা রইল।

[বিঃদ্রঃ – যদি স্তন থেকে রক্ত বা পুজ বের হয় বা কেবল একটি স্তন থেকেই তরল বের হয় তবে অতি শীঘ্র ডাক্তারের কাছে যান।]

No comments:

Post a Comment